01 October 2025
শারদীয়া দুর্গাপূজায় কাজী নজরুল ইসলাম বিরচিত “শ্রী শ্রী দুর্গা সংগীতের আসর ২০২৫” (Musical Evening Featuring Kazi Nazrul Islam’s “Durga Sangeet” on the Occasion of Durga Puja 2025)
সম্প্রীতির কবি কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন একজন বহুমাত্রিক কবি ও লেখক। বাংলা সাহিত্য তাঁর রচিত সংগীত, কবিতা, কাব্য ব্যতীত অসম্পূর্ণ। তাঁর রচিত অনেক সংগীত, যেমন- ভক্তিমূলক গান, গজল, প্রণয়গীতি, দেশাত্মবোধক গান, সমবেত সঙ্গীত, রণসঙ্গীত জনপ্রিয়তার কারণে সাধারণ মানুষের কাছে পরিচিত হলেও তাঁর রচিত দুর্গাসংগীতগুলো নানা কারণে সাধারণের কাছে পৌঁছাতে পারেনি, যে কারণে সেগুলো সুপরিচিত নয়। অথচ নজরুল রচিত শ্যামাসংগীতের মত তাঁর রচিত দুর্গাসংগীতগুলো সুর ও বাণীতে অনন্য। নজরুলের দুর্গাসংগীতগুলো শ্রবণে ভক্ত-শ্রোতাদের হৃদয়ে ভক্তির সঞ্চার ঘটে এবং এর সুরে ও বাণীতে আধ্যাত্মিক আবহের সন্নিবেশ হয়। বাঁশরী নজরুল রচিত এই স্বল্প পরিচিত দুর্গাসংগীতগুলো জনসাধারণের মধ্যে পৌঁছে দিতে দুর্গাপূজার সময় সংগীতানুষ্ঠানের আয়োজন করে যাচ্ছে প্রতি বছর।
শ্রী শ্রী শারদীয়া দুর্গোৎসব উপলক্ষে বাঁশরী প্রতিবার ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে নজরুল রচিত দুর্গাসংগীতের আসর আয়োজন করে। এই ধারাবাহিকতায় বাঁশরী এবার শারদীয়া দুর্গোৎসব উপলক্ষে ঢাকার বনানী, বারিধারা, গুলশান, খামারবাড়ি ও ঢাকার বাইরে টাঙ্গাইল, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মানিকগঞ্জের বিভিন্ন মন্দিরে দুর্গাসংগীত পরিবেশন করে, আর এই পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন বাঁশরীর শিল্পীগণ।
২১ সেপ্টেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় মিরপুর কেন্দ্রীয় মন্দিরে মহালয়ার অনুষ্ঠানে দুর্গাসংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে বাঁশরী এবারের শারদীয়া দুর্গোৎসবে দুর্গাসংগীতের আসর শুরু করে।
এরপর ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীতে টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার ভাতগ্রাম, বাগজানে অবস্থিত মা বুড়ীতলা কালী মন্দির প্রাঙ্গণে বিকেল ৫টায় ও শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ নাট মন্দির প্রাঙ্গণে সন্ধ্যা ৭.৩০টায় বাঁশরীর শিল্পীগণ দুর্গাসংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে মূল পর্বের আয়োজন শুরু করেন। এ পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন বাঁশরীর শিল্পী সিদ্ধার্থ গোলদার, পরেশ পাল, রেহানা পারভীন হাসি, মিলন পোদ্দার, স্বপন চন্দ্র দাস, খ্রিস্টিনা গোমেজ, সুমায়া সুলতানা অনি।
একই দিনে সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকার বনানী পূজা মণ্ডপে বাঁশরীর শিল্পীগণ দুর্গাসংগীত পরিবেশন করেন। এতে অংশগ্রহণ করেন বাঁশরীর শিল্পী সুদাম কুমার বিশ্বাস, পূরবী রায়, হৃদয় হোসেন, সুমন চন্দ্র দাস, মোঃ শাহেদুল ইসলাম, বিশ্বজিৎ জোদ্দার, দীপা রোজারিও ও পৃথুলা দত্ত প্রজ্ঞা।
২৯ সেপ্টেম্বর সপ্তমীতে সন্ধ্যা ৬টায় বাঁশরী টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার সখিপুর কেন্দ্রীয় মন্দির এবং কালিদাস মন্দিরে রাত ৮টায় বাঁশরীর শিল্পী রেহানা পারভীন হাসির নেতৃত্বে শিল্পী মিলন পোদ্দার, পরেশ পাল, খ্রিস্টিনা গোমেজ, সুমায়া সুলতানা অনি এবং স্বপন চন্দ্র দাস দুর্গাসংগীত পরিবেশন করেন। সপ্তমীর একই দিনে ময়মনসিংহের দুর্গাবাড়ি ধর্মসভা পূজামণ্ডপে সন্ধ্যা ৭টায় বাঁশরীর শিল্পীগণ দুর্গাসংগীতের মূর্ছনায় ভক্ত-শ্রোতাদের মাতিয়ে তোলেন। এই পরিবেশনায় শিল্পী সুদাম কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে অংশগ্রহণ করেন বাঁশরীর শিল্পী মোঃ শাহেদুল ইসলাম, পৃথুলা দত্ত প্রজ্ঞা, বিশ্বজিৎ জোদ্দার ও দীপা রোজারিও।
৩০ সেপ্টেম্বর অষ্টমীতে বারিধারা ডিওএইচএস পূজা মণ্ডপে সন্ধ্যা ৭টায়, ধামরাইয়ের সুয়াপুরে পরিমল চন্দ্র সাহার মন্দিরে রাত ৮টায় এবং খামারবাড়ি পূজামণ্ডপে রাত ৯টায় শারদীয়া দুর্গোৎসবের আয়োজনে বাঁশরীর শিল্পীগণ দুর্গাসংগীত পরিবেশন করেন। শিল্পী সুদাম কুমার বিশ্বাসের নেতৃত্বে বাঁশরীর শিল্পী হৃদয় হোসেন, মোঃ শাহেদুল ইসলাম, বিশ্বজিৎ জোদ্দার, পুরবী রায়, পৃথুলা দত্ত প্রজ্ঞা, দীপা রোজারিও এ পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়াও ৩০ সেপ্টেম্বর অষ্টমীতে বাঁশরী মানিকগঞ্জে দুর্গাসংগীত পরিবেশন করে। এ পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন বাঁশরীর শিল্পী রেহানা পারভীন হাসি, সুমাইয়া সুলতানা অনি, সুমন চন্দ্র দাস, পরেশ পাল, খ্রিস্টিনা গমেজ, মিলন পোদ্দার, স্বপন চন্দ্র দাস, পরদেশী সিদ্দিক।
১ অক্টোবর নবমীতে এবারের দুর্গাসংগীত আসরের শেষদিনের পরিবেশনা হিসেবে নড়াইলে অবস্থিত নড়াইল কেন্দ্রীয় মন্দিরে সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটে বাঁশরী দুর্গাসংগীতের আসর আয়োজন করে। অন্যদিকে নবমীতে বাঁশরীর আরেকটি দল ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার খোর্দ্দ রায়গ্রাম হরিসভা সার্বজনীন পূজা মন্দিরে রাত ৮টায় নজরুল রচিত দুর্গাসংগীত পরিবেশন করে। এতে বাঁশরীর শিল্পী রেহানা পারভীনের নেতৃত্বে শিল্পী স্বপন চন্দ্র দাস, সুমন চন্দ্র দাস, খ্রিস্টিনা গোমেজ, বিশ্বজিৎ জোদ্দার, সুমায়া সুলতানা অনি ও পরদেশী সিদ্দিক দুর্গাসংগীত পরিবেশন করেন এবং প্রখ্যাত বাচিকশিল্পী টিটো মুন্সী নজরুল রচিত কবিতা আবৃত্তি করে শোনান। এর মধ্য দিয়ে ২০২৫ সালে বাঁশরী আয়োজিত ৫দিন ব্যাপী দুর্গাসংগীত আসরের সমাপ্তি ঘটে।