মঞ্চ নাটক ও চলচ্চিত্র

কবি নজরুল ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে মঞ্চায়িত হলো কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ও বাঁশরী রেপাটরি থিয়েটার নিবেদিত নাটক ‘আলেয়া’

গত ২৯শে মে ২০২৫ তারিখ, বৃহস্পতিবার, সন্ধ্যা ৭.৩০ মিনিটে ঢাকার ধানমন্ডিতে অবস্থিত কবি নজরুল ইন্সটিটিউটের মিলনায়তনে কাজী নজরুল ইসলাম রচিত ও বাঁশরী রেপাটরি থিয়েটার নিবেদিত ‘আলেয়া’ নাটক মঞ্চায়ন করা হয়।


নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন বিশিষ্ট নাট্য নির্দেশক গোলাম সারোয়ার। নাটকটির নাট্যভাবনা ও পরিকল্পনায় ছিলেন বাঁশরীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামান। পোশাক পরিকল্পনায় ছিলেন আইরিন পারভিন লোপা, মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন জুনাইদ ইউসুফ, পরিকল্পনা সহযোগী ফজলে রাব্বী সুকর্ণো, আবহ সংগীত পরিকল্পনায় পরিমল মজুমদার, হামিদুর রহমান পাপ্পু, কোরিওগ্রাফিতে ছিলেন এম আর ওয়াসেক, সহযোগী হিসেবে ছিলেন জয়নুল ইসলাম সৈকত, আলোক পরিকল্পনায় ছিলেন অম্লান বিশ্বাস, কণ্ঠ সংগীত পরিচালনায় ছিলেন- ফয়সাল আহমেদ।


"আলেয়া" মূলত একটি গীতিনাট্যধর্মী নাটক। নির্দেশক গোলাম সারোয়ার বলেন, নাটকটি মূলত একটি প্রতীকী গীতিনাট্য। এই নাটকের গানগুলো গভীর এবং অর্থবহ। নাটকের মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে, রাজা মীনকেতু এবং রানী জয়ন্তীর প্রেম এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক, যেখানে প্রেমই শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়, যুদ্ধ বা হিংসা নয়। নাটকটির তিনটি প্রধান নারী চরিত্রের মধ্যে চন্দ্রিকা ব্যর্থ প্রেমিকা, জয়ন্তী শক্তির প্রতীক এবং কৃষ্ণা মীনকেতুর প্রধান মন্ত্রদাতা।


বাঁশরীর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামান বলেন, "নজরুল যে নাটকে অভিনয় করেছেন, সেই নাটককে মঞ্চে উপস্থাপন করা একটি আনন্দের কাজ এবং দর্শকরা এটি উপভোগ করবেন এমন বিশ্বাস রয়েছে।"


বলা যেতে পারে, এই নাটকে নারীর ক্ষমতায়ন, প্রেমের শক্তি, এবং রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের বদলে মানবিক সম্পর্কের গুরুত্বকে তুলে ধরা হয়েছে।

 


আরো পড়ুন

ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে 'জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম উৎসব' এ "বনের মেয়ে পাখী" পালানাটকের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত

“জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম উৎসব ২০২৫” এ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি কবি নজরুল রচিত “বনের মেয়ে পাখী” পালানাটক মঞ্চায়ন করা হয়। কাজী নজরুল ইসলাম রচিত এ পালানাটকের নাট্যভাবনা ও পরিকল্পনায় ছিলেন ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামান এবং নির্দেশনায় ছিলেন সাজ্জাদ সাজু। নাটকটির প্রযোজনায় ছিল বাঁশরী - একটি নজরুল চর্চা কেন্দ্র এবং বাঁশরী রেপার্টরির ব্যানারে এটি পরিবেশিত হয়। 


নাটকটির কাহিনীর সূত্রপাত ঘটে রায়গড়ের পাহাড় ও জঙ্গলাকীর্ণ শ্বাপদসংকুল পথের আবহের মধ্য দিয়ে, যেখানে রয়েছে বাঘের পদচারণা। সেই ভীতিজাগানিয়া পথে পালকিবাহী বেহাড়ার দল বাঘের আক্রমণের মুখে পড়ে। প্রাণভয়ে ভীত বেহারার দল পালকি ফেলে রেখে পলায়ন করে।


অন্যদিকে, পালকির ভেতরে নারী কণ্ঠের আর্তচিৎকার শুনে ছুটে আসে সাপুড়ে ভগুলাল। হিংস্র বাঘের সঙ্গে লড়াই করে সে উদ্ধার করে এক শিশুকন্যাকে। তবে শিশুটির মাকে বাঁচাতে পারে না ভগুলাল। সে উদ্ধারকৃত শিশুটিকে আগলে রেখে তাকে বড় করার দায়িত্ব নেয় এবং কন্যাশিশুটির নাম রাখে পাখী। ভগুলালের ঘরে বেড়ে ওঠা পাখী হয়ে গেলো বনের মেয়ে পাখী, যার নামে নাটকটির নামকরণ। সাপুড়ে ভগুলালের আদর-যত্নে-পিতৃস্নেহে বেড়ে ওঠে পাখী। সর্পদেবী মনসার কৃপায় পাখী লাভ করে যে কোনো ব্যাধি সারাবার অলৌকিক ক্ষমতা। একপর্যায়ে পাখীর সঙ্গে পরিচয় ঘটে সুজন নামের এক যুবকের, যার সাথে তার পরিচয় প্রণয়ে পরিণত হয়। গল্পের নানা ঘটনাপ্রবাহ ও মনসার বরে প্রাপ্ত ক্ষমতা পাখীকে তার অনিবার্য নিয়তির দিকে নিয়ে যায়, যেখানে সে ফিরে পায় তার হারানো পরিচয় ও পরিবার।


প্রচুর দর্শক সমাগম এবং দর্শকদের সাড়া জাগানিয়া আনন্দ-উচ্ছ্বাসে এই নাটকের মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে অর্ধদিবসব্যাপী এ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

 


আরো পড়ুন

লেটো-নাটক “স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া”, রচনা: কাজী নজরুল ইসলাম, নাট্যভাবনা ও পরিকল্পনা: ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামান

লেটো-নাটক “স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া”, রচনা: কাজী নজরুল ইসলাম, নাট্যভাবনা ও পরিকল্পনা: ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামান, নির্দেশনা: ফেরদৌস হাসান, প্রযোজনা: বাঁশরী - একটি নজরুল চর্চা কেন্দ্র, পরিবেশনা: বহর নাট্যনৃত্য দল।